মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ: বিমানবন্দর সংলগ্ন নিরাপত্তা বিতর্ক
এই
প্রতিবেদনটি মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ-এর প্রতিষ্ঠা,
এর অবস্থান এবং সংশ্লিষ্ট
বিধিমালা পরিপালন সংক্রান্ত একটি বিশ্লেষণ উপস্থাপন করে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে, প্রথমত,
এটি সুস্পষ্ট যে কলেজটির
শিক্ষাগত অনুমোদন বৈধ ।
তবে,
এর অবস্থান একটি ঘনবসতিপূর্ণ
এলাকা এবং উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ বিমান চলাচল অঞ্চলের মধ্যে হওয়ায় , বিশেষ করে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (সিএএবি)
থেকে নির্মাণ সংক্রান্ত অনাপত্তি সনদ (এনওসি) প্রাপ্তির কোনো সুস্পষ্ট সরকারি
রেকর্ড না থাকায় , উল্লেখযোগ্য বিধিমালা পরিপালন সংক্রান্ত প্রশ্ন
উত্থাপিত হয়েছে। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনা নগর
পরিকল্পনা এবং আন্তঃসংস্থা নিয়ন্ত্রক প্রয়োগের ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত দুর্বলতা
উন্মোচন করেছে।
ফলস্বরূপ,
এই প্রতিবেদনটি ভবিষ্যতে
অনুরূপ ঘটনা প্রতিরোধে সমন্বিত প্রশাসনিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয়।
মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ ও বর্তমান প্রেক্ষাপট
মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ, ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত ,
বাংলাদেশের একটি সুপরিচিত
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যা কিন্ডারগার্টেন থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাদান করে ।
উদাহরণস্বরূপ,
এই মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ-এর কার্যক্রম ঢাকার উত্তরা মডেল টাউনের বিভিন্ন সেক্টরে
একাধিক ক্যাম্পাসে পরিচালিত হয়,
যার মধ্যে প্রধান ক্যাম্পাস
গরীব-ই-নেওয়াজ এভিনিউতে এবং স্থায়ী ক্যাম্পাস দিয়াবাড়ী, তুরাগে অবস্থিত । শিক্ষাগত উৎকর্ষ ও শৃঙ্খলার জন্য এটি
পরিচিত ।
তবে,
২১ জুলাই, ২০২৫ তারিখে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ জেট
সরাসরি মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ-এর ক্যাম্পাসে বিধ্বস্ত হলে এর প্রতিষ্ঠার বৈধতা এবং
বিমানবন্দরের কাছাকাছি অবস্থানের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
ফলস্বরূপ,
এই প্রতিবেদনটি মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ-এর প্রতিষ্ঠা এবং চলমান কার্যক্রম বাংলাদেশের শিক্ষাগত ও
বিমান চলাচল নিরাপত্তা বিধিমালা মেনে চলছে কিনা, তা
মূল্যায়ন করবে। এই দুর্ঘটনা মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ-এর প্রতি জনদৃষ্টিকে নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন করেছে, যা নিরাপত্তা ও নিয়ন্ত্রক পরিপালনের গুরুতর প্রশ্ন তৈরি
করেছে। বস্তুত, এটি
একটি খণ্ডিত নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থার ইঙ্গিত দেয় ।
১. বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের নীতিমালা ও
মাইলস্টোন কলেজের অনুমোদন
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের সাধারণ নীতিমালা
বাংলাদেশে
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন,
পরিচালনা এবং একাডেমিক
স্বীকৃতি প্রদানের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও বিধিমালা রয়েছে। বিশেষ করে,
এই নিয়মাবলী প্রধানত শিক্ষা
মন্ত্রণালয় এবং
এর অধীনস্থ সংস্থা যেমন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এবং বিভিন্ন
শিক্ষা বোর্ড দ্বারা জারি করা হয় । এই নীতিমালাগুলিতে পাঠ্যক্রম অনুসরণ, শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়া (যা বেসরকারি
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা, ২০২১ দ্বারা পরিচালিত হয়), অবকাঠামোগত
প্রয়োজনীয়তা এবং একাডেমিক স্বীকৃতি ও অধিভুক্তি প্রাপ্তির পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত
রয়েছে ।
মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষাগত অনুমোদন
এই প্রেক্ষাপটে, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে
আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারি অনুমোদন লাভ করেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত এই
অনুমোদনটি ২০০২ সালের ১৮ মে তারিখে শা ৯১৬৮ (অংশ) ৩১৩ নম্বর স্মারকপত্রের মাধ্যমে
প্রদান করা হয়েছিল ।
এছাড়াও,
প্রতিষ্ঠানটি ঢাকা মাধ্যমিক ও
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে ২০০২ সালের ২৪ জুলাই তারিখে ১০৭৯ নম্বর
স্মারকপত্রের মাধ্যমে অনুমোদন পেয়েছে । এই অনুমোদনগুলি নির্দেশ করে যে, শিক্ষাগত এবং একাডেমিক দৃষ্টিকোণ থেকে,
মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ বাংলাদেশের প্রচলিত শিক্ষাবিধিমালা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠিত ও
পরিচালিত হচ্ছে ।
মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ-এর নিজস্ব কোড নম্বর ১০৫৬ এবং স্কুল কোড নম্বর ১০৯৮ ।
প্রতিষ্ঠানটি একটি গভর্নিং বডি দ্বারা পরিচালিত হয়, যা
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত ।
নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের মধ্যে সংযোগহীনতা
তবে,
এই শিক্ষাগত অনুমোদনগুলি মূলত
শিক্ষাগত ও প্রশাসনিক মানদণ্ড (যেমন পাঠ্যক্রম, শিক্ষক
যোগ্যতা, শিক্ষার্থীদের সুবিধা) নিয়ে কাজ করে এবং
বিমান চলাচল বা নগর পরিকল্পনা সম্পর্কিত বিশেষ নিরাপত্তা ছাড়পত্রকে অন্তর্ভুক্ত
করে না। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ঢাকা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক সুস্পষ্ট শিক্ষাগত
অনুমোদন থাকা সত্ত্বেও ,
বিমান চলাচল নিরাপত্তা এবং নগর
পরিকল্পনা সংক্রান্ত গুরুতর উদ্বেগ বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের (যেমন
শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, নগর উন্নয়ন সংস্থা) মধ্যে একটি মৌলিক সংযোগহীনতা বা
"সিলোয়িং" এর ইঙ্গিত দেয়।
মূলত,
এই বিভাজন এমন পরিস্থিতি তৈরি
করতে পারে যেখানে একটি প্রতিষ্ঠান একটি নিয়ন্ত্রক ডোমেনে বৈধ হলেও অন্যটিতে
যথেষ্ট ঝুঁকি তৈরি করে। এটি সমন্বিত পরিকল্পনা, সমন্বয়
এবং বিভিন্ন সরকারি বিভাগের মধ্যে প্রয়োগের অভাবে ঘটে, যা একটি গুরুতর পদ্ধতিগত ত্রুটি।
সারণী ১: মাইলস্টোন কলেজের প্রধান নিয়ন্ত্রক অনুমোদনসমূহ
অনুমোদনের কর্তৃপক্ষ |
অনুমোদনের ধরণ |
স্মারক/পত্র নম্বর |
অনুমোদনের তারিখ |
প্রাসঙ্গিক নীতিমালা/বিধিমালা |
কলেজ/স্কুল কোড |
শিক্ষা মন্ত্রণালয় |
প্রতিষ্ঠা অনুমোদন |
শা ৯১৬৮ (অংশ) ৩১৩ |
২০০২ সালের ১৮ মে |
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন, পাঠদান ও একাডেমিক স্বীকৃতি প্রদান নীতিমালা |
১০৫৬ (কলেজ), ১০৯৮
(স্কুল) |
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড |
একাডেমিক স্বীকৃতি |
১০৭৯ |
২০০২ সালের ২৪ জুলাই |
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন, পাঠদান ও একাডেমিক স্বীকৃতি প্রদান নীতিমালা |
১০৫৬ (কলেজ), ১০৯৮
(স্কুল) |
২. মাইলস্টোন কলেজের অবস্থান এবং বিমানবন্দরের সাথে
এর নৈকট্য
মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের ক্যাম্পাসসমূহ
মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ ঢাকার উত্তরা এলাকায় একাধিক ক্যাম্পাস পরিচালনা করে ।
উদাহরণস্বরূপ,
এর প্রধান ক্যাম্পাস ৩০ ও ৪৪
গরীব-ই-নেওয়াজ এভিনিউ, সেক্টর-১১,
উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০-এ অবস্থিত ।
এছাড়াও, মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ দিয়াবাড়ী,
তুরাগ, উত্তরা,
ঢাকা-১২৩০-এ একটি স্থায়ী
ক্যাম্পাস পরিচালনা করে, যা "উত্তরা মেট্রোরেল ডিপোর ঠিক
পাশেই" অবস্থিত বলে উল্লেখ করা হয়েছে । উত্তরা এলাকাটি একটি
"ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা" হিসেবে পরিচিত, যেখানে
মেট্রো স্টেশন, অসংখ্য দোকানপাট এবং বাড়িঘর রয়েছে, যা উচ্চ জনঘনত্বের ইঙ্গিত দেয় ।
বিমানবন্দরের সাথে ভৌগোলিক নৈকট্য
ফলস্বরূপ,
উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ-এর অবস্থান এটিকে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ বিমান চলাচল
সুবিধাগুলির কাছাকাছি স্থাপন করেছে। এটি বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি এ.কে.
খন্দকার থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার (প্রায় ৬.৮ মাইল) দূরে অবস্থিত । হযরত শাহজালাল
আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (এইচএসআইএ),
যা একটি প্রধান বেসামরিক ও
সামরিক বিমানবন্দর, ঢাকার কুর্মিটোলায় অবস্থিত এবং এটি রাজধানীর
উত্তরাঞ্চলীয় কেন্দ্র থেকে প্রায় ১৭ কিলোমিটার দূরে । বিমান বাহিনী ঘাঁটি এ.কে.
খন্দকারও কুর্মিটোলাতেই অবস্থিত ।
বিশেষ করে,
এই নৈকট্যের গুরুতর প্রভাব ২১
জুলাই, ২০২৫ সালের ঘটনায় স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে, যখন বিমান বাহিনী ঘাঁটি এ.কে. খন্দকার থেকে উড্ডয়নের পরপরই
একটি এফ-৭ বিজিআই জেট মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ-এর ক্যাম্পাসে বিধ্বস্ত হয় । এটি নিশ্চিত করে যে,মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ একটি সক্রিয় এবং গুরুত্বপূর্ণ বিমান চলাচলের পথের মধ্যে
অবস্থিত।
ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় অবস্থানের ঝুঁকি
উত্তরাকে
বারবার "ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা" হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে । এটি কেবল একটি
ভৌগোলিক বিবরণ নয়,
বরং একটি গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকির কারণ। এর অর্থ হলো, মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ একটি উচ্চ-ঘনত্বের বেসামরিক অঞ্চলের মধ্যে অবস্থিত, যা বিমান চলাচলের কোনো দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে ব্যাপক হতাহত এবং
ব্যাপক জনরোষের সম্ভাবনাকে নাটকীয়ভাবে বাড়িয়ে তোলে, যা ২০১৫ সালের দুর্ঘটনার মাধ্যমে মর্মান্তিকভাবে প্রমাণিত
হয়েছে। সুতরাং, একটি
ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় একটি স্কুল নির্মাণ,
এমনকি যদি কিছু বিধিমালা
অনুযায়ী এটি প্রযুক্তিগতভাবে অনুমোদিতও হয়, তবুও তা যেকোনো দুর্ঘটনার মানবিক মূল্যকে সহজাতভাবে
বৃদ্ধি করে, যা এটিকে জননিরাপত্তা এবং নিয়ন্ত্রক উদ্বেগের
একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় করে তোলে।
ব্যবহারকারীর
প্রশ্ন ছিল, "এটি কি বিমানবন্দরের কাছাকাছি অবস্থিত?" মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ ঢাকার বিমানবন্দরগুলির কাছাকাছি অবস্থিত, যা বিভিন্ন তথ্যে নিশ্চিত হয়েছে । এর অবস্থানের সবচেয়ে
জোরালো প্রমাণ হলো বিমান দুর্ঘটনাটি সরাসরি কলেজের ক্যাম্পাসে ঘটেছে । এই সরাসরি
প্রভাব দ্ব্যর্থহীনভাবে
মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ-কে বিমানবন্দরের অপারেশনাল বিপদ অঞ্চলের মধ্যে স্থাপন করে। অতএব,
বিমান চলাচলের ছাড়পত্রের
প্রশ্নটি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে,
নির্দিষ্ট কোনো নটিক্যাল
মাইলের ব্যাসার্ধের চেয়েও বেশি।
৩. বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকায় স্থাপনা নির্মাণের
বিধিমালা ও উচ্চতা সীমাবদ্ধতা
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা
বাংলাদেশ
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (সিএএবি) দেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কার্যক্রমের প্রধান
নিয়ন্ত্রক সংস্থা ।
প্রথমত,
এর ম্যান্ডেটের মধ্যে রয়েছে
সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়ন এবং আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থা
(আইসিএও) কর্তৃক নির্ধারিত মান ও সুপারিশমালা অনুসরণ করা । সিএএবি-এর নিয়ন্ত্রক
কাঠামো বেসামরিক বিমান চলাচল অধ্যাদেশ ১৯৬০ এবং বেসামরিক বিমান চলাচল বিধিমালা
১৯৮৪-এর উপর ভিত্তি করে গঠিত,
যা সুনির্দিষ্ট বিমান চলাচল
আদেশ দ্বারা পরিপূরিত ।
আইসিএও অ্যানেক্স-১৪ এবং এনওসি-এর প্রয়োজনীয়তা
আন্তর্জাতিক
বিমান চলাচল নিরাপত্তার একটি মূল ভিত্তি হলো আইসিএও
অ্যানেক্স-১৪ (ভলিউম
১), যা বিমানবন্দরগুলির জন্য ব্যাপক মান ও
প্রস্তাবিত অনুশীলনগুলি তুলে ধরে। এতে রানওয়ে ও ট্যাক্সিওয়ে ডিজাইন, বাধা সীমাবদ্ধতা পৃষ্ঠ (ওএলএস), ভিজ্যুয়াল এইডস এবং জরুরি পরিষেবাগুলির মতো গুরুত্বপূর্ণ
দিকগুলি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে । বাংলাদেশ সহ সদস্য রাষ্ট্রগুলি বিশ্বব্যাপী বিমান
ভ্রমণ নিরাপত্তা ও দক্ষতা নিশ্চিত করতে এই মানগুলি প্রয়োগ করতে বাধ্য।
গুরুত্বপূর্ণভাবে, সিএএবি-এর দায়িত্ব হলো বিমানবন্দর রেফারেন্স পয়েন্ট থেকে
১৫,০০০ মিটার (প্রায় ৯.৩ মাইল) ব্যাসার্ধের মধ্যে
যেকোনো কাঠামো, যার মধ্যে ভবনও অন্তর্ভুক্ত, বা এই ব্যাসার্ধের বাইরে ১৫০ মিটার (প্রায় ৪৯২ ফুট) এর বেশি
উচ্চতার কাঠামোর জন্য "অনাপত্তি সনদ" (এনওসি) জারি করা ।
এছাড়াও,
বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকায় ভবন
নির্মাণের ক্ষেত্রে বাধা সীমাবদ্ধতা পৃষ্ঠ (ওএলএস) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওএলএস
হলো বিমানবন্দর এবং এর সংলগ্ন আকাশসীমায় কল্পিত পৃষ্ঠ, যা বস্তুর উচ্চতাকে সীমাবদ্ধ করে বিমান চলাচলের নিরাপত্তা
নিশ্চিত করে, বিশেষ করে উড্ডয়ন ও অবতরণের সময় । এই
পৃষ্ঠগুলি বিমানবন্দরের ভৌত সীমানার বাইরেও বিস্তৃত এবং এর জন্য সুরক্ষামূলক জোনিং
বিধিমালা প্রয়োজন ।
ঢাকার বিমানবন্দরের উচ্চতা সীমাবদ্ধতা অঞ্চল
এই প্রসঙ্গে,
ঢাকার বিমানবন্দরের জন্য
সুনির্দিষ্ট উচ্চতা সীমাবদ্ধতা অঞ্চলগুলি নির্ধারিত রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ,
"স্ট্রিপ, রানওয়ে ও রেডজোন"-এর জন্য শূন্য ফুট উচ্চতা
বাধ্যতামূলক। "আউটার অ্যাপ্রোচ" জোনে ১৫০ থেকে ৫০০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতা
বৃদ্ধির অনুমতি রয়েছে, যেখানে ঢাল ১:৪০। অন্যদিকে, "কনিক্যাল সার্ফেস" ১৫০ ফুট থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫০০
ফুট পর্যন্ত উচ্চতা বৃদ্ধির অনুমতি দেয়,
যেখানে ঢাল ১:২০ ।
বিধিমালা লঙ্ঘনের পরিণতি
এই
বিধিমালাগুলি বাধা-মুক্ত আকাশসীমা বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত জরুরি, কারণ নিয়ম লঙ্ঘন করলে উড্ডয়ন কার্যক্রমে সীমাবদ্ধতা, বিমানের পেলোড হ্রাস এবং বিমান ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার জন্য
গুরুতর নিরাপত্তা ঝুঁকির মতো মারাত্মক পরিণতি হতে পারে ।
ফলস্বরূপ,
বিশেষজ্ঞরা স্পষ্টভাবে উল্লেখ
করেছেন যে, বিমান দুর্ঘটনার উচ্চ ঝুঁকির কারণে বিমানবন্দরের
অ্যাপ্রোচ পথের কাছাকাছি স্কুল,
কলেজ এবং শপিং মলের মতো
উচ্চ-ঘনত্বের স্থাপনা নির্মাণে কঠোর বিধিমালা রয়েছে ।
বিশেষভাবে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং তেজগাঁও
বিমানবন্দরের আকাশসীমার মধ্যে,
যেকোনো নির্মাণের অনুমোদিত
উচ্চতা এইচএসআইএ-এর ওএলএস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, যেখানে
তেজগাঁও রানওয়ের কেন্দ্রীয় রেখা থেকে ১.৮ কিলোমিটার পূর্বে একটি নির্দিষ্ট
ছাড়পত্র রয়েছে । সাধারণ আইসিএও নির্দেশিকা অনুযায়ী, বিমানবন্দরের ১৫ কিলোমিটারের মধ্যে ৫০০ ফুটের বেশি উচ্চতার
ভবন সাধারণত অনুমোদিত নয় এবং এই নিয়ম লঙ্ঘন করলে আইসিএও সদস্যপদ স্থগিতও হতে
পারে।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও নিয়ন্ত্রক প্রয়োগ
সিএএবি
একটি "সরকারি সেবা প্রতিষ্ঠান" এবং একটি "নিয়ন্ত্রক সংস্থা"
উভয় হিসেবে কাজ করে ।
যদিও এর নিয়ন্ত্রক ম্যান্ডেট বিমান চলাচল নিরাপত্তা
মানগুলির কঠোর পরিপালন নিশ্চিত করা, তবুও এর অপারেশনাল ফাংশনগুলি সম্ভাব্য স্বার্থের
সংঘাত তৈরি করতে পারে। এই দ্বৈত ভূমিকা অনিচ্ছাকৃতভাবে নিয়ন্ত্রক প্রয়োগের
কঠোরতাকে প্রভাবিত করতে পারে,
বিশেষ করে যখন শক্তিশালী
বেসরকারি সংস্থা বা অন্যান্য সরকারি সংস্থার সাথে কাজ করা হয়, যা নিরাপত্তা তদারকিতে আপস করতে পারে।
সৈয়দপুর
বিমানবন্দরের জন্য "২৫ নটিক্যাল মাইল" নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করা হলেও , ঢাকার বিমানবন্দরগুলির জন্য এই নির্দিষ্ট দূরত্বটি
ধারাবাহিকভাবে প্রয়োগ করা হয়নি বা স্পষ্টভাবে উদ্ধৃত করা হয়নি।
পরিবর্তে,
ঢাকার বিমানবন্দরগুলির জন্য
বিধিমালাগুলি আরও জটিল বাধা সীমাবদ্ধতা পৃষ্ঠ (ওএলএস) এর উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, যেখানে বিভিন্ন উচ্চতার সীমা, ঢাল
এবং নির্দিষ্ট ব্যাসার্ধ রয়েছে (যেমন,
এনওসি-এর জন্য ১৫,০০০ মিটার ব্যাসার্ধ ;
ওএলএস-এর জন্য ০-৫০০ ফুট
উচ্চতা )। এটি তুলে ধরে যে বিমান চলাচল বিধিমালাগুলি অত্যন্ত স্থান-নির্দিষ্ট এবং
সূক্ষ্ম, যা একটি অভিন্ন দূরত্বের নিয়ম নয় এবং এটি
পরিপালন ও প্রয়োগে জটিলতা বাড়াতে পারে।
সুতরাং,
এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ
চ্যালেঞ্জ।
মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ ২০০২ সালে তার শিক্ষাগত অনুমোদন লাভ করে । আইসিএও অ্যানেক্স ১৪ (প্রথম প্রকাশিত ১৯৫১ সালে ) এবং
বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল অধ্যাদেশ (১৯৬০) ও বেসামরিক বিমান চলাচল বিধিমালা
(১৯৮৪) -এর মতো মূল বিমান চলাচল বিধিমালাগুলি কলেজের প্রতিষ্ঠার আগে বা কাছাকাছি
সময়ে কার্যকর ছিল।
অতএব,
এর অর্থ হলো, বর্তমান উদ্বেগগুলি নতুন বিধিমালা পূর্ববর্তীভাবে প্রয়োগ
করা নিয়ে নয়, বরং প্রতিষ্ঠার সময় বিদ্যমান বিধিমালাগুলির
সম্ভাব্য অ-পরিাপালন বা সময়ের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ধারাবাহিক
প্রয়োগের ব্যর্থতা নিয়ে।
সারণী ২: বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকার উচ্চতা সীমাবদ্ধতা
সংক্রান্ত প্রধান বিধিমালা
নিয়ন্ত্রক সংস্থা |
বিধিমালা/নীতিমালার নাম |
মূল বিধানাবলী |
প্রযোজ্যতা |
প্রণয়ন/সংশোধনের তারিখ |
সিএএবি,
আইসিএও |
আইসিএও অ্যানেক্স ১৪ (ভলিউম ১), বেসামরিক বিমান চলাচল অধ্যাদেশ ১৯৬০, বেসামরিক বিমান চলাচল বিধিমালা ১৯৮৪, এয়ার নেভিগেশন অর্ডার (যেমন, এএনও (এডি) এ.১), সিএএবি গাইডেন্স ম্যানুয়াল (জিএম ১৪-২৭) |
বাধা সীমাবদ্ধতা পৃষ্ঠ (ওএলএস) সংজ্ঞা, নির্দিষ্ট উচ্চতা সীমা (যেমন, রানওয়ের জন্য ০ ফুট, আউটার অ্যাপ্রোচ/কনিক্যাল সার্ফেসের জন্য ১৫০-
৫০০ ফুট), ঢালের প্রয়োজনীয়তা, ১৫,০০০ মিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে বা ১৫০
মিটারের বেশি উচ্চতার কাঠামোর জন্য বাধ্যতামূলক এনওসি, অ্যাপ্রোচ পথের কাছাকাছি উচ্চ-ঘনত্বের স্থাপনা
নিষিদ্ধকরণ। |
সকল বিমানবন্দর, হযরত
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (এইচএসআইএ), তেজগাঁও
বিমানবন্দর, রানওয়ের চারপাশে নির্দিষ্ট অঞ্চল। |
আইসিএও অ্যানেক্স ১৪ (১৯৫১), অধ্যাদেশ (১৯৬০), বিধিমালা (১৯৮৪), এএনও (এডি) এ.১ (২০১২), জিএম ১৪-২৭ (২০২৪) |
৪. বিমান চলাচল বিধিমালা পরিপালন: মাইলস্টোন কলেজের
ক্ষেত্রে বিশ্লেষণ
সিএএবি অনাপত্তি সনদের অনুপস্থিতি
বাংলাদেশ
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (সিএএবি) এর বিধিমালা অনুযায়ী, প্রথমত,
একটি বিমানবন্দর রেফারেন্স
পয়েন্ট থেকে ১৫,০০০ মিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে যেকোনো কাঠামো বা
বাধার নির্মাণের জন্য অনাপত্তি সনদ (এনওসি) একটি বাধ্যতামূলক পূর্বশর্ত । এই
প্রয়োজনীয়তা নিশ্চিত করার জন্য যে নতুন নির্মাণগুলি বাধা সীমাবদ্ধতা পৃষ্ঠ
(ওএলএস) লঙ্ঘন করবে না এবং বিমান চলাচলের নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে না।
বিমান
চলাচল বিশেষজ্ঞরা ধারাবাহিকভাবে এই বিধিমালাগুলির গুরুত্ব তুলে ধরেছেন, জোর দিয়ে বলেছেন যে সিএএবি এবং স্থানীয় নগর পরিকল্পনা
সংস্থাগুলির মতো কর্তৃপক্ষকে "রানওয়ের অ্যাপ্রোচ পথের কাছাকাছি বসতি
স্থাপনের অনুমতি দেওয়ার জন্য জবাবদিহি করতে হবে," যা
সামরিক ও বেসামরিক উভয় বিমান চলাচলের নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য ।
"অপরিকল্পিত নগরায়ন এবং শিথিল জোনিং বিধিমালা" যা ঐতিহাসিকভাবে
বিমানবন্দর অ্যাপ্রোচ পথের কাছাকাছি স্কুল এবং শপিং মলের মতো উচ্চ-ঘনত্বের
স্থাপনাগুলির বিকাশের অনুমতি দিয়েছে,
তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা
হয়েছে,
যদিও এই ধরনের বিপজ্জনক স্থানগুলিকে নিষিদ্ধ করার
জন্য কঠোর বিধিমালা রয়েছে ।
তবে, মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ-এর অফিসিয়াল "আমাদের সম্পর্কে" বিভাগগুলির (About Us) একটি সমালোচনামূলক পর্যালোচনা শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে প্রাপ্ত অনুমোদনের সুস্পষ্ট উল্লেখ দেখায়। গুরুত্বপূর্ণ
বিষয় হলো,
মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ-এর নির্মাণ বা অবস্থানের জন্য বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল
কর্তৃপক্ষ (সিএএবি) বা বাংলাদেশ বিমান বাহিনী (বিএএফ) থেকে বিমানবন্দর বা উচ্চতা
সীমাবদ্ধতা সংক্রান্ত কোনো নির্দিষ্ট অনাপত্তি সনদ (এনওসি) বা ছাড়পত্রের সুস্পষ্ট
উল্লেখ পাওয়া যায় না। এই অনুপস্থিতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বিমান চলাচল নিরাপত্তা অঞ্চলের মধ্যে কাঠামোর জন্য এই
ধরনের অনুমোদন বাধ্যতামূলক।
বিশেষজ্ঞদের সমালোচনা ও নিরাপত্তা উদ্বেগ
ফলস্বরূপ,
২০২৫ সালের জেট দুর্ঘটনার পর, সংবাদ প্রতিবেদন এবং বিশেষজ্ঞদের মতামত এই বিষয়টি নিয়ে
তদন্ত আরও তীব্র করেছে। বিমান চলাচল বিশেষজ্ঞরা প্রকাশ্যে "মেগা শহরের উপর
প্রশিক্ষণ ফ্লাইট" নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং সিএএবি-কে "বেসামরিক
যাত্রীদের স্বার্থ রক্ষা করতে ব্যর্থ" হওয়ার জন্য সমালোচনা করেছেন, কারণ তারা এই প্রেক্ষাপটে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে সামরিক
ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দিয়েছে । দুর্ঘটনাটি নিজেই "
মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ-এর কাছাকাছি বিমান চলাচল নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ
সৃষ্টি করেছে" , যা নিয়ন্ত্রক তদারকির বিষয়টি সামনে নিয়ে
এসেছে।
বিমান
চলাচল বিশ্লেষক কাজী ওয়াহিদুল আলম বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন যে, ঘনবসতিপূর্ণ ঢাকার উপর সামরিক বিমান চলাচল, বিশেষ করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছাকাছি, উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি তৈরি করে। তিনি তুলে ধরেছেন যে, ফ্লাইট পথে অসংখ্য উঁচু ভবন থাকার কারণে পাইলটদের প্রায়শই
দ্রুত উচ্চতা বাড়াতে হয়, যা তিনি স্পষ্টভাবে "বিমান চলাচল নিরাপত্তা
নিয়মের লঙ্ঘন" বলে অভিহিত করেছেন ।
তদুপরি,
সিএএবি সামরিক বাহিনীর
দুর্ঘটনার তদন্তে "সরাসরি জড়িত ছিল না" ,
যদিও হাইকোর্টের বিচারকরা একটি স্বাধীন কারিগরি কমিটি
গঠনের আহ্বান জানিয়েছিলেন। এটি এই ধরনের জটিল নিরাপত্তা ঘটনা মোকাবেলায় সমন্বিত, বহু-সংস্থা তদারকির অভাবের ইঙ্গিত দেয়। দুর্ঘটনার পর ব্যাপক
জনরোষ এবং শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ,
যার মধ্যে জবাবদিহিতা, বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণে সংস্কার এবং পুরানো বিমান বাতিল
করার দাবি অন্তর্ভুক্ত ছিল,
তা উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ বিমান
চলাচল এলাকায় জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত ব্যর্থতাকে আরও প্রকট
করে তোলে ।
সুতরাং,
এটি একটি গুরুতর সমস্যা।
নিয়ন্ত্রক তদারকি ও সমন্বয়ের অভাব
সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ-এর অফিসিয়াল প্ল্যাটফর্মে (যেমন, তাদের ওয়েবসাইট) বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল
কর্তৃপক্ষ (সিএএবি) বা বাংলাদেশ বিমান বাহিনী থেকে কোনো অনাপত্তি সনদ (এনওসি) বা
নির্দিষ্ট নির্মাণ/অবস্থান অনুমোদনের কোনো সুস্পষ্ট উল্লেখের অভাব। শিক্ষাগত
অনুমোদনগুলি স্পষ্টভাবে তালিকাভুক্ত থাকলেও,
এই ধরনের অনুমোদনগুলি বিমান
চলাচল নিরাপত্তা অঞ্চলের মধ্যে কাঠামোর জন্য বাধ্যতামূলক হওয়ায় এবং
কলেজটির বিমান চলাচলের পথের মধ্যে নিশ্চিত অবস্থানের কারণে , এই অনুপস্থিতি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এটি সরাসরি
ব্যবহারকারীর প্রশ্নকে নির্দেশ করে যে,
বিমান চলাচল নিরাপত্তার
দৃষ্টিকোণ থেকে "প্রয়োজনীয় অনুমতি নেওয়া হয়েছে?"।
বিমান
দুর্ঘটনা এবং পরবর্তীকালে বিশেষজ্ঞদের সমালোচনা সম্মিলিতভাবে "দুর্বল
নগর পরিকল্পনা এবং শিথিল জোনিং বিধিমালা"-এর একটি ব্যাপক সমস্যার দিকে ইঙ্গিত
করে, যা একটি উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ বিমান চলাচল অঞ্চলে
একটি উচ্চ-ঘনত্বের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের অনুমতি দিয়েছে। এটি
রাজধানী
উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)-এর
মতো নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (সিএএবি)-এর মধ্যে সমন্বয়
এবং প্রয়োগ পদ্ধতির একটি মৌলিক ভাঙ্গন নির্দেশ করে। এর ফলস্বরূপ,
একটি বিপজ্জনক নগর পরিস্থিতি
তৈরি হয়েছে যেখানে বেসামরিক স্থাপনাগুলি সক্রিয় বিমান চলাচলের পথে অবস্থিত, যা সরাসরি বিমান চলাচল নিরাপত্তা নিয়ম লঙ্ঘন করে।
সিএএবি
সামরিক বাহিনীর দুর্ঘটনার তদন্তে "সরাসরি জড়িত ছিল না" ,
যদিও হাইকোর্ট একটি কারিগরি কমিটি গঠনের আহ্বান
জানিয়েছিল। এটি পূর্বে চিহ্নিত নিয়ন্ত্রক বিভাজনকে আরও স্পষ্ট করে তোলে। তদন্তের
এই বিভাজন জটিল ঘটনাগুলির ব্যাপক বিশ্লেষণকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে, যা একাধিক নিয়ন্ত্রক ডোমেন জুড়ে বিস্তৃত, সম্ভাব্যভাবে সমস্ত অবদানকারী কারণ চিহ্নিত করতে বাধা দেয়
এবং পদ্ধতিগত ব্যর্থতার জন্য জবাবদিহিতার সুযোগ সীমিত করে।
৫. সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ ও জনমত
২০২৫ সালের বিমান দুর্ঘটনা: বিস্তারিত
২০২৫
সালের ২১ জুলাই, একটি মর্মান্তিক ঘটনায়, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি এফ-৭ বিজিআই প্রশিক্ষণ জেট
ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ-এর ক্যাম্পাসে বিধ্বস্ত হয়। এই বিধ্বংসী দুর্ঘটনায় ২৯ জন
শিক্ষার্থী, ২ জন শিক্ষক এবং পাইলট সহ অন্তত ৩২ জন নিহত এবং
১৬৫ জন আহত হন ।
প্রাথমিকভাবে,
সামরিক বাহিনীর প্রাথমিক
বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, পাইলট ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে বিমানটিকে দূরে
সরিয়ে নেওয়ার জন্য বীরত্বপূর্ণ চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু
"কারিগরি ত্রুটির" কারণে একটি দোতলা ভবনে আঘাত হানে ।
দুর্ঘটনার প্রতিক্রিয়া ও শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ
এই
দুর্ঘটনা তাৎক্ষণিকভাবে দেশজুড়ে শিক্ষার্থী,
অভিভাবক এবং সাধারণ জনগণের
মধ্যে ব্যাপক শোক, ক্ষোভ এবং তীব্র প্রতিবাদের জন্ম দেয় ।
শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে পরিচালিত বিক্ষোভগুলিতে স্পষ্ট দাবি উত্থাপন করা হয়, যার মধ্যে হতাহতদের সঠিক তালিকা প্রকাশ, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে দ্রুত ক্ষতিপূরণ প্রদান, সামরিক কর্মীদের দ্বারা শিক্ষকদের উপর কথিত হামলার জন্য
প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া, পুরানো ও অনিরাপদ প্রশিক্ষণ বিমান বাতিল এবং
বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ প্রোটোকল সংস্কারের দাবি অন্তর্ভুক্ত ছিল । সরকারি
উপদেষ্টাদেরকে প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের দ্বারা আটকে রাখার ঘটনা জনরোষের তীব্রতাকে
আরও তুলে ধরে, যা তাৎক্ষণিক জবাবদিহিতার দাবিকে জোরদার করে ।
নগর পরিকল্পনা ও বিমান চলাচল নিরাপত্তা নিয়ে বিতর্ক
ফলস্বরূপ,
এই ট্র্যাজেডি নগর পরিকল্পনা
এবং বিমান চলাচল নিরাপত্তার বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
বিমান চলাচল বিশেষজ্ঞ এবং পাইলটরা "ঘনবসতিপূর্ণ ঢাকার উপর সামরিক প্রশিক্ষণ
ফ্লাইটের পরিচালনা" নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক
বিমানবন্দরের মতো একটি প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এত কাছাকাছি এই ধরনের
কার্যক্রমের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন । "দুর্বল নগর পরিকল্পনা এবং
শিথিল জোনিং বিধিমালা" নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে, যা একটি "উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ বিমান চলাচল অঞ্চলে"
একটি স্কুল নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে । সক্রিয় বিমান চলাচলের পথে অসংখ্য উঁচু
ভবনের উপস্থিতি, যা পাইলটদেরকে দ্রুত উচ্চতা বাড়াতে বাধ্য করে
বলে জানা গেছে, তাকে সুনির্দিষ্টভাবে "বিমান চলাচল
নিরাপত্তা নিয়মের লঙ্ঘন" হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ।
এছাড়াও,
ঘনবসতিপূর্ণ শহুরে কেন্দ্রগুলি
থেকে সামরিক বিমান বাহিনীর ঘাঁটি সরিয়ে নেওয়ার জন্য "বারবার আহ্বান"
জানানো হয়েছে, যা সহজাত ঝুঁকির দীর্ঘস্থায়ী স্বীকৃতি নির্দেশ
করে ।
অতএব,
এই মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনার
পর তাৎক্ষণিক ও তীব্র জনবিক্ষোভ,
যার মধ্যে ব্যাপক প্রতিবাদ এবং
জবাবদিহিতার সুস্পষ্ট দাবি অন্তর্ভুক্ত ছিল, তা
বিদ্যমান বিধিমালা এবং সেগুলির প্রয়োগের একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, ব্যাপক পর্যালোচনার জন্য একটি শক্তিশালী অনুঘটক হিসেবে কাজ
করেছে। এই জনচাপ এখন বিমান চলাচল নিরাপত্তা এবং নগর পরিকল্পনা সম্পর্কিত পদ্ধতিগত
সমস্যাগুলি সমাধান করার জন্য সরকারকে বাধ্য করার একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকা শক্তি, যা অন্যথায় হয়তো অমীমাংসিত থাকত বা কম জরুরি মনোযোগ পেত।
বিশেষজ্ঞদের
মন্তব্য স্পষ্টভাবে প্রকাশ করে যে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার
উপর সামরিক ফ্লাইট এবং বিমান চলাচলের পথে উঁচু ভবনের উপস্থিতি সংক্রান্ত সমালোচনা
"দীর্ঘদিনের" এবং "বিমান চলাচল নিরাপত্তা নিয়মের লঙ্ঘন"
হিসেবে বিবেচিত। এটি নির্দেশ করে যে নিয়ন্ত্রক ব্যর্থতা এবং নিরাপত্তা ঝুঁকিগুলি
নতুনভাবে আবিষ্কৃত হয়নি,
বরং দুর্ঘটনার অনেক আগে থেকেই পরিচিত ছিল এবং মূলত
অমীমাংসিত ছিল। সুতরাং, এই
ঘটনাটি একটি বিচ্ছিন্ন দুর্ঘটনা নয়, বরং দীর্ঘস্থায়ী, অপরিবর্তিত
পদ্ধতিগত ঝুঁকির মর্মান্তিক পরিণতি।
সুপারিশমালা
প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে মূল সিদ্ধান্তসমূহ:
- শিক্ষাগত
বৈধতা: মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ-এর শিক্ষাগত অনুমোদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়
এবং ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে বৈধ,
যা ২০০২ সাল থেকে এর
একাডেমিক প্রতিষ্ঠা বিধিমালা পরিপালন নিশ্চিত করে ।
- বিপজ্জনক
অবস্থান: শিক্ষাগত অবস্থান থাকা সত্ত্বেও, উত্তরা, একটি
ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ-এর অবস্থান এটিকে হযরত শাহজালাল
আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটি এ.কে. খন্দারের কাছাকাছি
স্থাপন করেছে। জুলাই ২০২৫ সালের জেট দুর্ঘটনার মাধ্যমে মর্মান্তিকভাবে
প্রমাণিত হয়েছে যে এই অবস্থানটি দ্ব্যর্থহীনভাবে একটি সক্রিয় বিমান চলাচলের
পথের মধ্যে পড়ে ।
- বিমান
চলাচল ছাড়পত্রের অভাব: দ্বিতীয়ত, প্রদত্ত গবেষণা তথ্য, যার মধ্যে মাইলস্টোন
স্কুল এন্ড কলেজ-এর নিজস্ব প্রকাশ্য তথ্যও অন্তর্ভুক্ত, তাতে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল
কর্তৃপক্ষ (সিএএবি) বা বাংলাদেশ বিমান বাহিনী থেকে এর নির্মাণ বা অবস্থানের
জন্য বিমানবন্দর বা উচ্চতা সীমাবদ্ধতা সংক্রান্ত কোনো নির্দিষ্ট অনাপত্তি সনদ
(এনওসি) বা ছাড়পত্র প্রাপ্তির কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ নেই । জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল
বিধিমালা অনুযায়ী বিমানবন্দর নিরাপত্তা অঞ্চল এবং উচ্চতা সীমাবদ্ধতা এলাকার
মধ্যে কাঠামোর জন্য এই ধরনের ছাড়পত্র বাধ্যতামূলক।
- পদ্ধতিগত
নিয়ন্ত্রক ব্যর্থতা: তৃতীয়ত, এই ঘটনাটি উল্লেখযোগ্য পদ্ধতিগত সমস্যাগুলি
উন্মোচন করেছে, যার মধ্যে "দুর্বল নগর পরিকল্পনা
এবং শিথিল জোনিং বিধিমালা" এবং নগর উন্নয়ন, শিক্ষা এবং বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের মধ্যে
সমন্বিত নিয়ন্ত্রক তদারকি ও সমন্বয়ের গুরুতর অভাব অন্তর্ভুক্ত । ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার উপর সামরিক ফ্লাইট
এবং বিমান চলাচলের পথে উঁচু ভবনের উপস্থিতি সম্পর্কে বিমান চলাচল বিশেষজ্ঞদের
দ্বারা উত্থাপিত দীর্ঘস্থায়ী উদ্বেগগুলি অমীমাংসিত ছিল, যা প্রতিরোধযোগ্য বিপর্যয়ে অবদান রেখেছে ।
- জনগণের
জবাবদিহিতা: অবশেষে, ব্যাপক জনরোষ এবং শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ
বিমান চলাচল নিরাপত্তা ও নগর পরিকল্পনা সংক্রান্ত বিষয়ে সরকারের কাছ থেকে
জবাবদিহিতা এবং তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের গভীর দাবিকে তুলে ধরে ।
ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে নিয়ন্ত্রক সংস্থা, নগর পরিকল্পনাবিদ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য সুপারিশ:
- সমন্বিত
নিয়ন্ত্রক কাঠামো: প্রথমত, বাংলাদেশ সরকারকে একটি শক্তিশালী, সমন্বিত এবং আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়কারী
সংস্থা বা টাস্ক ফোর্স প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এই সংস্থাকে সমন্বিত নগর
পরিকল্পনা এবং বিমান চলাচল নিরাপত্তা বিধিমালা নিশ্চিত করার ক্ষমতা প্রদান
করতে হবে। এর ম্যান্ডেটের মধ্যে সিএএবি থেকে যেকোনো নির্মাণ, বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য
উচ্চ-ঘনত্বের স্থাপনার জন্য যৌথ অনুমোদন এবং সুস্পষ্ট অনাপত্তি সনদ (এনওসি)
বাধ্যতামূলক করা উচিত,
যা বিমান চলাচল নিরাপত্তা
অঞ্চলের সাথে ওভারল্যাপ করে। এর লক্ষ্য বিদ্যমান নিয়ন্ত্রক বিভাজন ভেঙে
দেওয়া।
- সক্রিয়
জোনিং এবং প্রয়োগ: এছাড়াও, সিএএবি, স্থানীয়
নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (যেমন,
রাজউক)-এর সহযোগিতায়, সকল বিমানবন্দর এবং বিমান ঘাঁটির আশেপাশে
বিদ্যমান বাধা সীমাবদ্ধতা পৃষ্ঠ (ওএলএস) এবং উচ্চতা সীমাবদ্ধতাগুলি
সক্রিয়ভাবে চিহ্নিত, ম্যাপ এবং কঠোরভাবে প্রয়োগ করবে। এর
মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিমান চলাচল নিরাপত্তা অঞ্চলের মধ্যে অবস্থিত সকল
বিদ্যমান কাঠামো, বিশেষ করে স্কুল, কলেজ এবং হাসপাতালের মতো উচ্চ-ঘনত্বের
বেসামরিক স্থাপনার একটি ব্যাপক নিরীক্ষা অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
অ-পরিাপালনকারী কাঠামোর জন্য সংশোধনমূলক ব্যবস্থা, যার মধ্যে ভেঙে ফেলা বা উচ্চতা হ্রাস
অন্তর্ভুক্ত, গ্রহণ করতে হবে ।
- উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ
সুবিধার স্থানান্তর বা সীমাবদ্ধতা: তদুপরি, ঘনবসতিপূর্ণ শহুরে কেন্দ্রগুলি যেমন ঢাকা
থেকে সামরিক বিমান বাহিনীর ঘাঁটি সরিয়ে নেওয়ার দীর্ঘস্থায়ী দাবিকে গুরুত্ব
সহকারে এবং অবিলম্বে বিবেচনা করা উচিত। বিকল্পভাবে, বেসামরিক জনগোষ্ঠীর ঝুঁকি কমাতে এই ধরনের
এলাকার উপর প্রশিক্ষণ ফ্লাইটের উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে ।
- বর্ধিত
স্বচ্ছতা এবং প্রকাশ্য তথ্য: পাশাপাশি, সকল নিয়ন্ত্রক অনুমোদন, বিশেষ করে জননিরাপত্তা সংক্রান্ত (যেমন, বিমানবন্দরের কাছাকাছি নির্মাণের জন্য
সিএএবি এনওসি), ডিজিটালাইজড করে একটি কেন্দ্রীয়
সরকারি পোর্টালে প্রকাশ্যভাবে সহজলভ্য এবং সহজে যাচাইযোগ্য করতে হবে।
সংবেদনশীল স্থানে অবস্থিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিকে তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট
এবং প্রাঙ্গনে সকল প্রাসঙ্গিক নিরাপত্তা ছাড়পত্র স্পষ্টভাবে প্রকাশ করতে
বাধ্য করতে হবে।
- নিয়মিত, স্বাধীন নিরাপত্তা নিরীক্ষা: এছাড়াও, সকল
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য নিয়মিত,
বহু-সংস্থা নিরাপত্তা
নিরীক্ষা পরিচালনা করা উচিত,
বিশেষ করে যেগুলি সহজাত
নিরাপত্তা ঝুঁকির এলাকায় (যেমন,
বিমানবন্দরের কাছাকাছি, শিল্প অঞ্চল) অবস্থিত। এই নিরীক্ষাগুলি সকল
প্রাসঙ্গিক বিল্ডিং কোড,
অগ্নি নিরাপত্তা মান এবং
বিমান চলাচল বিধিমালাগুলির চলমান পরিপালন নিশ্চিত করবে এবং এর ফলাফল জনসমক্ষে
প্রকাশ করা হবে।
- ক্ষতিপূরণ
এবং সহায়তা প্রক্রিয়া: একইভাবে, সরকার এই ধরনের ট্র্যাজেডির শিকার এবং
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির জন্য সুস্পষ্ট,
দ্রুত এবং পর্যাপ্ত
ক্ষতিপূরণ কাঠামো এবং ব্যাপক সহায়তা প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা করবে। এটি সরকারি
জবাবদিহিতা এবং নাগরিক কল্যাণের প্রতি অঙ্গীকার প্রদর্শন করে ।
- বিমান
বাহিনীর প্রশিক্ষণ প্রোটোকল পর্যালোচনা: সর্বোপরি, দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, একটি উচ্চ-পর্যায়ের কমিটি বাংলাদেশ বিমান
বাহিনীর প্রশিক্ষণ প্রোটোকলগুলি,
যার মধ্যে ফ্লাইট পথ, বিমান রক্ষণাবেক্ষণ এবং জরুরি পদ্ধতি
অন্তর্ভুক্ত, পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করবে, যাতে নিরাপত্তা বৃদ্ধি পায় এবং
পুনরাবৃত্তি রোধ করা যায় ।
এই
প্রতিবেদনের অনুসন্ধানগুলি মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজ-এর পরিপালন মূল্যায়নের বাইরেও বিস্তৃত। সংক্ষেপে বলতে গেলে, এর
গভীরতর অর্থ হলো, ভবিষ্যতের ট্র্যাজেডি প্রতিরোধে বিভিন্ন সেক্টর
(শিক্ষা, নগর পরিকল্পনা, বিমান
চলাচল) জুড়ে প্রশাসনিক কার্যকারিতা সংস্কারের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন রয়েছে।
এর জন্য নিয়ন্ত্রক বিভাজন ভেঙে দেওয়া,
আন্তঃসংস্থা সহযোগিতা বৃদ্ধি
করা এবং একটি দ্রুত নগরায়নকারী পরিবেশে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সুস্পষ্ট
জবাবদিহিতার রেখা স্থাপন করা অপরিহার্য।
শক্তিশালী
জনমত এবং শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক প্রতিবাদ কেবল ট্র্যাজেডির তাৎক্ষণিক পরিণতি নয়,
বরং প্রয়োজনীয় নীতিগত পরিবর্তনগুলি চালিত করার
জন্য শক্তিশালী শক্তি। সুপারিশগুলি এই জনমতকে কৌশলগতভাবে ব্যবহার করে বৃহত্তর
স্বচ্ছতা, কঠোর প্রয়োগ এবং সকল সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থার
কাছ থেকে বর্ধিত জবাবদিহিতার পক্ষে সমর্থন করবে, কারণ এটি স্বীকার করে যে কার্যকর শাসনের জন্য জনবিশ্বাসের
অপরিহার্য।
Comments
Post a Comment